উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩/১০/২০২৩ ৯:১৯ পিএম

চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের পর এবার শ্লীলতাহানি ও বসতবাড়ি দখলের অভিযোগে উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়েছে। তারই ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহবুবুল আলম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি সোমবার (২৩ অক্টোবর) এ মামলাটি করেন।

আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন। উখিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে মামলাটি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গৃহবধূর শ্লীলতাহানি ও বসতবাড়ি দখলের অভিযোগে মামলাটি করা হয় বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী আবুল কালাম ছিদ্দিকী। মামলার বাদী মাহবুবুল আলম হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব মরিচ্যার মিয়াজান ফকিরের ছেলে।

চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী (৪৫) ছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কবির আহমদের ছেলে করিম উল্লাহ, তার ভাই এহেছান (৩০), মেহের আলীর ছেলে মো. রায়হান (৩৯), ছৈয়দ নুরের ছেলে ইনজিমামুল হক (২৮), ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালামাত উল্লাহর ছেলে এনায়েত উল্লাহ (৪০) এবং পশ্চিম মরিচ্যার জাগির আহমদের ছেলে জসিম উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, বাড়ির পাশে মরিচ্যা বাজারে তিনি দীর্ঘদিন ধরে লাকড়ি ও কলার আড়তের ব্যবসা করে আসছেন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ইমরুল কায়েস বাদীকে তার বসতভিটার জমি বিক্রির প্রস্তাব দেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হতো। তারপরও জমি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় গত ১৮ এপ্রিল একটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাকে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন চেয়ারম্যান। একইদিন সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস ২০/২৫ জন লোক নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় বাদীর বসতবাড়িতে হামলা চালান। এসময় তার অনুসারীরা প্রায় এক লাখ টাকার মালামাল ও গরু লুট করে নিয়ে যান। এসময় বাড়িটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলায় তার প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, হামলার সময় বাদীর স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করা হয়। বাদী কারাবন্দি থাকায় স্ত্রী-সন্তান মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। ১৮ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর স্থানীয় লোকজনের কাছে বিচার দেন তিনি। কিন্তু ন্যায় বিচার না পেয়ে অবশেষে আদালতে অভিযোগ করেন।

মামলার বাদী মাহবুবুল আলম বলেন, আমার বিরুদ্ধে ঘোড়ার মাংস বিক্রির মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে একটি মামলায় আসামি করা ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। চেয়ারম্যান ইমরুলই গোড়াটি জবাই করে আমার ওপর অভিযোগ তুলে দেন। পরে স্বপ্রণোদিত হয়ে আমাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তার আসল উদ্দেশ্য ছিল আমার বসতভিটা দখল করা।

তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের জমি কেড়ে নেওয়ার ঘৃণ্যতম কাজ শুরু করেছেন তিনি। আমি যতদিন কারাগারে ছিলাম ততদিন আমার স্ত্রী-সন্তান খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেছে। আমি এর ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।

অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে জানতে উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর মোবাইলফোনে কল করা হয়। রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার হোয়াটসঅ্যাপে বক্তব্য চেয়ে ভয়েস মেসেজ পাঠানো হয়, তারও কোনো উত্তর করেননি তিনি।

তবে মামলার বিষয়টি জেনে চেয়ারম্যান ইমরুল তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে লেখেন, শব-ই কদরের দিন ঘোড়া জবাই করা মরিচ্যার কসাই মাহাবুর সঙ্গে আজকে আদালত চত্বরে কে কে ছিল একটু খবর নিন।

কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে এক পথসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আটটি কেন্দ্রে ‘ভোট ডাকাতি’ করেছিলেন বলে বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হন চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস। এ ঘটনায় ইসি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে। দীর্ঘসূত্রিতার কারণে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল গত ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে ইমরুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। গত ১৬ অক্টোবর তার বাড়ির পাশ থেকে তিন হাজার ৩৩০ কেজি ভিডাব্লিউবির (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট) চাল জব্দের ঘটনায় পুরো কক্সবাজারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে মামলাও হয়েছে। ইমরুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও নানা অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। সুত্র জাগোনিউজ

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খান কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে করছেন। এসময় ...

সোনাদিয়া দ্বীপে বেজার ইকো-ট্যুরিজম পার্কের কার্যক্রম স্থগিত

কক্সবাজারের মহেশখালীতে সোনাদিয়া দ্বীপে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলার শর্তে সরকারের ...

দু'দিনের বার্ষিক আয়োজনে পরিচালক মিশু- ওশান প্যারাডাইসের কর্মীরা নৈতিকতা-সেবা ও কর্মদক্ষতায় প্রসিদ্ধ

কর্মজীবীরাই একটি প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। পর্যটন জোনের তারকা হোটেল গুলোর সুনাম এখানকার বিভিন্ন বিভাগে কাজ করা ...